হাওজা নিউজ এজেন্সি: গ্র্যান্ড আয়াতুল্লাহ নাসির মাকারেম শিরাজি হাওজা নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাতে ইমাম সাদিক (আ.)-এর জীবনের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন। তাঁর মতে, ইমাম সাদিক (আ.)-এর জীবন ও কর্ম শুধু ইবাদত বা আধ্যাত্মিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; বরং তা ছিল জ্ঞানের গভীর এক দ্যুতিময় বিস্তার।
আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজির ভাষায়:
প্রথমত, হাদীসবিশারদদের মতে, কোনো ইমাম ইমাম জাফর সাদিক (আ.)-এর মতো বিপুল সংখ্যক হাদীস বর্ণনা করেননি। তাঁর কথামালায় ইসলামী দর্শন, ফিকহ, নীতিশাস্ত্র ও সমাজ চিন্তার অফুরন্ত ঝরনা প্রবাহিত হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, ইমাম জাফর সাদিক (আ.)-এর গড়ে তোলা জ্ঞানের পাঠশালা ছিল অসাধারণ, অতুলনীয়। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, তাঁর সময়ে চার হাজারেরও বেশি ছাত্র-শিষ্য তাঁর নিকট থেকে ধর্ম, বিজ্ঞান ও যুক্তির নানা শাখায় শিক্ষা লাভ করেছিলেন। এদের অনেকেই পরবর্তী সময়ে ইসলামী জ্ঞানের মহান ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত হন।
তৃতীয়ত, এবং সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ইমাম জাফর সাদিক (আ.) ইসলামী শিক্ষায় যুক্তিবাদ ও চিন্তাশীলতাকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনি কেবল অন্ধ অনুসরণের বিপরীতে চিন্তাশীল ইমানের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁর দর্শনে যুক্তি, প্রমাণ এবং অন্তর্দৃষ্টি ছিল বিশ্বাসের আবশ্যিক উপাদান।
গ্র্যান্ড আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজি জোর দিয়ে বলেন, ইমাম জাফর সাদিক (আ.)-এর দেখানো চিন্তার আলো আজও ইসলামী সভ্যতার বুদ্ধিবৃত্তিক প্রাণশক্তি হিসেবে প্রজ্জ্বলিত। ইসলামী ফিকহ, দর্শন এবং চিন্তাচর্চার প্রত্যেক ধাপে তাঁর প্রভাব সুস্পষ্ট।
ইমাম সাদিক (আ.) প্রমাণ করেছিলেন, ইসলাম কেবল একটি বিশ্বাসের নাম নয়; বরং তা একটি যুক্তিনিষ্ঠ সভ্যতার অবিচ্ছেদ্য অংশ। আজকের বৈশ্বিক মুসলিম চিন্তাজগতে ইমাম জাফর সাদিক (আ.)-এর ভূমিকা আরও গভীরভাবে অনুধাবন করা জরুরি হয়ে উঠেছে।
আপনার কমেন্ট